আধুনিক উপায়ে করলা চাষ পদ্ধতি
“বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ”- এই বাক্যটি আমদের কাছে অনেক পরিচিত। কৃষি প্রধান অনেক দেশ আছে যেমন- ভারত, ভিয়েতনাম, চীন, অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল প্রভৃতি। কৃষিতে এই দেশগুলো যেমন স্বয়ংসম্পূর্ন তেমনি প্রযুক্তি শিল্পেও উন্নতদের কাতারে। এর প্রধান কারন যুগোপযোগীভাবে সবকিছুর আধুনিকায়ন। কৃষিতেও এই দেশগুলা সে আধুনিকায়ন টা সময়উপযোগী ভাবে করতে সক্ষম হয়েছে। পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রের কারণে তাদের ক্ষতির আশঙ্ক্ষাও অনেক কম থাকে।
বাংলাদেশ কৃষির এই আধুনিকায়নের জায়গাতেই অনেক পিছিয়ে। পরিপূর্ণ প্ল্যানিং সঠিক পদ্ধতি অনুসরন না করার ফলে কৃষকদের লাভের থেকে ক্ষতির সম্মুখিনই বেশি হতে হয়। Agro1 ঠিক এই জায়গাতেই কাজ করছে। দেশের কৃষির আধুনিকায়নে আবদান রাখা এবং স্মার্ট কৃষি উদ্যোক্তা তৈরি করাই Agro1 এর মিশন ও ভিশন।সেই লক্ষ্যেই স্মার্ট কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য Agro1 তৈরি করেছে আধুনিক সবজি চাষের ম্যানুয়াল। এর মধ্যে আধুনিক ভাবে করলা চাষের বিস্তারিত পদ্ধতি বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে।
১. করলার পুষ্টি গুনাগুণ:
করলাতে ভিটামিন এ ও সি বিদ্যমান। এছাড়াও এটি পটাশিয়াম, জিংক ও আয়রনের একটি ভালো উৎস। এছাড়াও বিভিন্ন এন্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধের ক্ষমতা বাড়ায়। এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রন করে, মেদ দূর করে, রক্তচাপের ঝুঁকি কমায় এবং লিভার ভালো রাখে।
২. জাত নির্বাচনঃ
যে কোন ফসল উৎপাদন ক্ষেত্রে জাত নির্বাচন প্রধান একটি বিষয়। শুধুমাত্র সঠিক জাত নির্বাচনের উপরেই নির্ভর করবে আপনার প্রজেক্টের সফলতা এগ্রো১ যে সকল করলার জাত সরবরাহ করে থাকে সেগুলা হলো, লিডার, ছক্কা, ছক্কা সুপার, বস, মায়াবতী বাংলাদেশে যে সকল করলার জাত চাষ হয় তার মধ্যে এই জাতগুলো থেকে অনেক ভাল ফলন পাওয়া যায়।
৩. করলার জাতগুলোর বৈশিষ্ট্যঃ
লিডার,মায়াবতী, বস তীব্র শীত ছাড়া সবসময় ও ছক্কা প্রায় সারাছরই চাষ করা যায়।
লিডার,মায়াবতী, বস জাতে সাধারনত ৪০-৪২ দিনেই ফল সংগ্রহ করা যায় এবং ছক্কা জাতের ক্ষেত্রে সময়টা আরো কম, মাত্র ২৮-৩৫ দিন ।
মায়াবতী ও লিডার জাত দুটি আকারে ছোট, খারা কাটাযুক্ত হয়ে থাকে এবং বস ও ছক্কা আকারে মাঝারি সাইজের হয়ে থাকে।
মায়াবতী ও লিডার জাতের ফলপ্রতি গড় ওজন ৮০-৯০ গ্রাম, ছক্কায় ১০০-১২০ গ্রাম এবং বস জাতে যেটা ২০০-২৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে।
জাতগুলোর ফল স্বাদে অনেক সু-স্বাদু।
জাতগুলোর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশী ও ভাইরাস প্রতিরোধি।
৪. চারা রোপনের সময়ঃ ১ম ধাপঃ
ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি মার্চের ১ম সপ্তাহ। ২য় ধাপঃ জুলাই-আগস্ট।
৫. জমি প্রস্তুত করনঃ
(৩৩ শতাংশ জমির জন্য প্রযোজ্য) করলা চাষাবাদে দোঁআশ মাটি সবচেয়ে উত্তম। এছাড়া এটেল দোঁআশ ও বেলে দোঁআশ মাটিতে চাষাবাদ করা যায়। জমি নির্বাচন করে ৫-৬টি চাষ দিয়ে মাটি সম্পূর্ণভাবে ঝুরঝুরে করে নিয়ে নিম্নোক্ত সারগুলো প্রদান করতে হবে:
- টিএসপি ৪০ কেজি
- ডিএপি ২০ কেজি
- এমওপি ৩০ কেজি
- জিপসাম ১০ কেজি + বোরন ১ কেজি ১ কেজি (আলাদা করে ১/২ দিন আগে/পরে ছিটিয়ে প্রয়োগ করতে হবে) ২ কেজি
- ফুরাডান * 1-ভার্মিকম্পোস্ট/1-ট্রাইকোকম্পোস্ট ২০০ কেজি(একসাথে মিক্স করে বেড তৈরির পূর্বে প্রোয়োগ করে দিতে হবে)
সম্পর্ণ সার মিশ্রিত করে শেষ চাষে জমিতে বেড তৈরি করে নিতে হবে।
২য় ধাপে সার প্রয়োগ (গাছের বয়স ৪০-৪৫ দিন হলে, ফলের গুটি আসলে)
৬. বেডের মাপঃ
- ডিএপি ১৫ কেজি
- এমওপি ১০ কেজি
- ম্যাগনেশিয়াম ২কেজি
[পানি সেচের পর ড্রেনে প্রয়োগ করতে হবে
১.৫ ফুট দৈর্ঘ্য পরিমান মত বেড থেকে বেডের দূরত্ব ১.৫ ফুট বেডের উচ্চতা ৮’-১০” ইঞ্চি (উচু জমি)/১২”-১৬” ইঞ্চি (নিচু জমি) ড্রেন গভীরতা- ১ ফুট
চারা থেকে চারার দূরত্ব- ২.৫-৩ ফুট।
৭. মালচিং পদ্ধতিঃ
করলা চাষের ক্ষেত্রে মাটির আর্দ্রতা প্রচুর পরিমানে প্রয়োজন হয়, যে কারণে করলা চাষে মালচিং ব্যবহার আবশ্যক । মালচিং ফিল্ম ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, মালচিং বেডে বিছানোর সময় দু’পাশে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। যাতে বেডের ভিতরে আলো ও বাতাস চলাচল না করতে পারে।
৮. চারা তৈরিঃ
করলা চাষে চারা তৈরি করে মূল জমিতে রোপন করা সবচেয়ে উত্তম। করলার জন্য চারা তৈরি করে ১৫ থেকে ১৮ দিন বয়সে চারা মূল জমিতে রোপন করতে হয়। চারাগুলো অবশ্যই আধুনিক পদ্ধতিতে নেট হাউজের মধ্যে ট্রে ও কোকোপিটের মাধ্যমে তৈরি করতে হবে ।
৯. চারা রোপনঃ
তৈরিকৃত চারা উল্লেখিত ২.৫-৩ ফুট দূরত্বে মালচিং ছিদ্র করে বেডের মাঝখানে কোকোপিট পর্যন্ত গভীরতায় রোপন করতে হবে। এ সময় খেয়াল রাখতে হবে যেনো চারার গোড়া মাটির বেশী গভীরে প্রবেশ না করে, এতে চাড়ার গোড়া পচে যাওয়ার আশঙ্খা থাকে ।
১০. মাচা প্রদানঃ
করলার জন্য A প্যাটার্নের মাচা সবচেয়ে উপযোগী, সেই ক্ষেত্রে মাচার ব্যবহৃত বাতা ৬.৫ – ৭.৫’ ফুট উচ্চতা নিয়ে বেডের দু’পাশে A প্যাটার্নের শক্ত করে পুতে দিতে হবে। কাঠি অথবা সুতলীর মাধ্যমে দু’পাশে ও মাঝ বরাবর টানা দিয়ে দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে মাচার উচ্চতা ৬ ফুট হতে হবে।
১১. স্প্রে শিডিউলঃ
- চারা রোপনের পর ঝাঝুরি অথবা বদনা দ্বারা পানি দিতে হবে।
- ১নং স্প্রে-চারার বয়স ৪/৫ দিনঃ- ম্যানসার-৩০ গ্রাম/২০লিটার পানিতে। কট\রেলিথ্রিন-১৫ মিলি/২০লিটার পানিতে
- ২ নং স্প্রে-চারার বয়স ৮/৯ দিনঃ- সাকা-২০মিলি/২০লিটার পানিতে উলালা-৫ গ্রাম/২০লিটার পানিতে
- ৩ নং চারার বয়স ১০/১৫ দিন– ম্যানসার-৪০ গ্রাম/২০লিটার পানিতে চেলাজিং-১০ গ্রাম/২০লিটার পানিতে +
- ৪ নং স্প্রে-গাছের বয়স ১৭/১৯ দিনঃ- + 4 সাকা-২০মিলি/২০ লিটার পানিতে উলালা ৫ গ্রাম / ২০ লিটার পানিতে সাস্পেন্স\ওয়ান্ডার ১৫ গ্রাম/২০ লিটার পানিতে
- ৫ নং স্প্রে-গাছের বয়স ২২/২৫ দিনঃ- + কমপ্লেসাল-৫০মিলি/২০ লিটার পানিতে ম্যানসার ৪০ গ্রাম/২০ লিটার পানিতে
- ৬ নং স্প্রে-গাছের বয়স ২৭/২৯ দিনঃ- 4 সাকা-২০মিলি/২০লিটার পানিতে উলালা -৫ গ্রাম/ ২০লিটার পানিতে সাস্পেন্স\ওয়ান্ডার ১৫ গ্রাম / ২০ লিটার পানিতে
- ৭ নং স্প্রে-গাছের বয়স ৩৫/৩৮ দিনঃ- 4 + ওবেরন-২০মিলি/২০ লিটার পানিতে সলোমন ২০মিলি / ২০ লিটার পানিতে এন্ট্রাকল ৫০ গ্রাম / ২০ লিটার পানিতে
- ৮ নং স্প্রে-গাছের বয়স ৪৩/৪৫ দিনঃ- সাকা-২০মিলি/২০লিটার পানিতে উলালা ৫ গ্রাম/২০লিটার পানিতে সাস্পেন্স\ওয়ান্ডার ১৫ গ্রাম / ২০ লিটার পানিতে
- ৯ নং স্প্রে-গাছের বয়স ৫০/৬০ দিনঃ- কম্পেস্যাল\ ফ্লোরা ৫০মিলি / ২০লিটার পানিতে। সলুবর বোরন ৩২ গ্রাম/২০লিটার পানিতে ২ নং স্প্রে থেকে একই ভাবে চলতে থাকবে।
সেচ ব্যবস্থাঃ
করলা চাষে মাটির পর্যাপ্ত আর্দ্রতার ব্যবস্থা করতে হয়, তাই প্রয়োজন অনুসারে ৫/৭ বার পর্যন্ত সেচ প্রয়োজন হয়।
১২. করলার চাষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোঃ
- মাচার নিচের প্রশাখাগুলো ছাটাই করতে হবে।
- করলা মাটি অথবা মালচিং ফিল্ম এর সাথে স্পর্শ করানো যাবে না।
- গাছের নিচের বয়স্ক পাতা ও রোগাক্রান্ত পাতা নিয়মিত ছাটাই করতে হবে। ফলের সাইজ বড় হওয়ার পূর্বে সুতলি অথবা নেটের মাধ্যমে বেধে দিতে হবে। করলা চাষে ড্রেনে অনেক সময় পানি রাখার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
- গাছের প্রয়োজনে (ড্রেনে) ইউরিয়া অথবা ডিএপি সার ব্যবহার করতে হবে।
- প্রতিনিয়ত জমি পরিদর্শনের মাধ্যমে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
- বলে রাখা ভালো— উল্লেখিত চাষ পদ্ধতি সম্পূর্ণ বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে তুলে ধরা হয়েছে। আধুনিক কৃষি উপকরণ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ পেতে এগ্রো ওয়ান এর সাথেই থাকুন ।
9 Comments
Md Ashadul Nabi
August 23, 2024Agro1 কে জানাই আন্তরিক অভিনন্দন। আমি আমি ইন্ডিয়া থেকে আপনাদের নিও মিতো অনুষ্ঠান দেখি। খুব ভালো লাগে, এর পাশাপাশি যেভাবে আপনারা এ টু জেড চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত দিয়েছেন তা যদি কোনো চাষী মেনে চলে , তাহলে নিজেই একজন সফল চাষী হয়ে যাবে । এবং বাংলাদেশের মতো দেশ কে অন্য দেশের ওপর নির্ভশীল হতে হবে না। তাই পরিশেষে বলি অগ্র1 এর আধুনিক পদক্ষেপের জন্য অনেক চাষী উপকৃত হবে। ধন্যবাদ অগ্র1 ও তার টিম ম্যানেজমেন্ট কে
https://Bandur-art.blogspot.com/2024/08/the-ultimate-guide-to-no-mans-sky-mods.html
September 4, 2024I think this is one of the most vital information for me.
And i amm satisfied studying your article.However waant to remark on few basic things, Thhe web sie style is ideal, the articles is actually excellent : D.
Good activity, cheers https://Bandur-art.blogspot.com/2024/08/the-ultimate-guide-to-no-mans-sky-mods.html
https://Bandur-art.blogspot.com/2024/08/the-ultimate-guide-to-no-mans-sky-mods.html
September 4, 2024I think this is one of the most vital information for me.
And i am satisfied studying your article. However want to remark on few basic things, The weeb sie style is ideal, the
articles is actually excellentt : D. Good activity,
cheers https://Bandur-art.blogspot.com/2024/08/the-ultimate-guide-to-no-mans-sky-mods.html
adminag
October 23, 2024Thank you very much sir for your comment.
casino that accept prepaid Visa cards
December 19, 2024Hello,
It’s always fascinating to explore how much top athletes like Virat Kohli and Rohit Sharma contribute in taxes each year, reflecting their massive earnings from cricket and endorsements.
Harrison2958
April 22, 2025Awesome https://is.gd/tpjNyL
Jacqueline4569
April 23, 2025Very good https://is.gd/tpjNyL
Elinor4640
April 23, 2025Very good https://is.gd/tpjNyL
adminag
April 23, 2025ধন্যবাদ স্যার